目录:
- কী?–孟加拉国的姜黄是什么
- উপকারী?姜黄在孟加拉国如何工作?
- উপকারিতা–姜黄在孟加拉国的好处
- উপকারিতা–姜黄在孟加拉国的健康益处
- ১)দিয়ে:肝脏排毒
- ২)ভূমিকা:糖尿病
- ভূমিকা)ভূমিকা:增强免疫力
- ৪)Cancer:癌症
- ভূমিকা):减肥/新陈代谢
- ৬)Anti:抗炎
- ৭)হলুদ:抗氧化剂
- ৮)ব্যবহার:心脏健康/胆固醇
- ৯):消化
- ১০) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় হলুদের ভূমিকা : Brain Health/Alzheimer’s disease
- ১১) প্রাকৃতিক বেদনা নাশক হিসেবে পরিচিত হলুদ : Natural Pain Killer
- ১২) মাসিকের যন্ত্রণা কমাতে হলুদের ব্যবহার : Reduces Menstrual Pain
- ১৩) বাতের ব্যথা কমাতে হলুদের ব্যবহার : Arthritis
- ১৪) প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে হলুদের ব্যবহার : Natural Antiseptic/Wounds Healing
- ১৫) সর্দি কাশি নিরাময়ে হলুদের ভূমিকা : Cough
- ত্বকের জন্য হলুদের উপকারিতা – Skin Benefits of Turmeric in Bengali
- ১) ব্রণ দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার : Acne Treatment
- ২) সোরিয়াসিস চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার : Psoriasis
- ৩) বলিরেখা দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার : Wrinkles
- ৪) রোদে পোড়া দাগ কমাতে হলুদের ব্যবহার : Sunburns
- ৫) স্ট্রেচ মার্ক কমাতে হলুদের ব্যবহার : Stretch Marks
- ৬) পিগমেন্টেশন কমাতে হলুদের ব্যবহার : Pigmentation
- ৭) ফাটা গোড়ালির চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার : Cracked feet
- ৮) এক্সফোলিয়েশন এ হলুদের ব্যবহার : Aids Exfoliation
- চুলের জন্য হলুদের উপকারিতা – Hair Benefits of Turmeric in Bengali
- ১) চুল পড়া কমাতে হলুদের ব্যবহার : Prevents Hair Loss
- ২) খুশকি দূরীকরণে হলুদের ভূমিকা : Dandruff
- হলুদের পুষ্টিগত মান – Turmeric Nutritional Value in Bengali
- হলুদের ব্যবহার – How to Use Turmeric in Bengali
- হলুদের অপকারিতা – Side Effects of Turmeric in Bengali
- ১) গর্ভাবস্থায় কিংবা প্রসূতিকালীন অবস্থায় সমস্যা :
- ২) কিডনির পাথর বাড়িয়ে তুলতে পারে :
- ৩) শরীরে লোহার অভাব :
- ৪) রক্তপাতের সমস্যা :
- ৫) অ্যালার্জির সম্ভাবনা :
- ৬) পেট খারাপ বা ডায়রিয়া :
পরিচর্যায়পরিচর্যায়পরিচর্যায়পরিচর্যায়পরিচর্যায়পরিচর্যায় আমরাজেনেগুনাগুনগুনাগুন সমস্যাসমস্যাসমস্যাচলেছেচলেছেচলেছেসমস্যা কিংবাকিংবাসকলেইসকলেইসকলেই ধরোধরোধরোধরোধরোধরোমামামাধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরোধরো ক্ষেত্রেহলুদেরকরেকরেকরে অনেকবিউটিহয়েহয়ে গুরুত্বআমরাসকলেই হবেহবেহবেহবেহবেসেখানেওকিন্তুসঙ্গীহলুদ。 আমরাহলুদেরজানিনা。জানিনা。সেটাজানিনা。সেটাজানিনা。সেটাসেটাজানিনা。 আয়ুর্বেদবিভিন্নআসছে。আসছে。হয়েহয়েআসছে。হয়েআসছে。হয়েআসছে。 অ্যান্টিঅ্যান্টিব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়ালব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিঅ্যান্টিআর্সিনোজেনিকআর্সিনোজেনিকআর্সিনোজেনিকআর্সিনোজেনিকআর্সিনোজেনিক থেকেথেকেসহায়তাসহায়তাসহায়তা মধ্যেসকালথাকি。থাকি。থাকি。খেয়েখেয়েখেয়েখেয়েখেয়েখেয়ে এবারনিনকিকিকিকিকিকিথাকে? (১)
কী?–孟加拉国的姜黄是什么
জাফরানবাবলাবলা অন্যতমউপাদানগবেষণাগবেষণাগবেষণাগবেষণাগবেষণা
তোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলেতোলে নিরাময়হিসাবেকরাকরা
উপকারী?姜黄在孟加拉国如何工作?
থেকেপ্রাপ্তহলোহলোহলো দেশেমূলতঃহলোহলোহলোহলোহলো ক্ষেত্রেওএরকরাকরা হলুদেরবৈজ্ঞানিকনামকারকুমালঙ্গা。 আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ফাইবার,কপার,ম্যাগনেসিয়াম জন্যব্যবহারথাকে。থাকে。হয়েহয়েহয়েহয়েহয়েহয়ে রোগপ্রতিরোধককরেকরে জাফরানবাকরাকরা উপাদান,স্বাস্থ্যকেসুরক্ষিতসহায়তা ধরেইশাস্ত্রেহয়েহয়ে হলুদগ্রহণেরসম্ভবসম্ভবসম্ভবসম্ভব কেনকেনকেনকেন? গুরুত্বপূর্ণযৌগটিহল ক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সার যেমন,হৃদরোগের,করে,করে,করে,এইডস,এইডস,করে,করে,করে,করে,করে,করে করেকরেওজনকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরে বহুসমস্যারপারেপারে (২)
উপকারিতা–姜黄在孟加拉国的好处
তালিকায়রাখারসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টক্যান্সারক্যান্সারঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্টঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাডিক্যালসএবংসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তা করেকরেকরেকরেকরেকরেকরেবাতবাতবাতবাতবাতকরেকরেকরেকরেকরেকরে ধরেহলুদকরাকরাকরা শুরুশুরুজেনেজেনেজেনেজেনেজেনে
উপকারিতা–姜黄在孟加拉国的健康益处
হোকহোকহোকহোকহোকহোকহোকহোকহোকহোক রক্ষায়হলুদজেনেজেনেজেনে
১)দিয়ে:肝脏排毒
快门
গুরুত্বপূর্ণঅঙ্গমধ্যে অন্যতমভেষজহলোহলো করেকরেকরেকরে৩(৩)。 গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছে অন্যতমএকটিঅক্সিডেটিভঅক্সিডেটিভ আঘাতকেওপ্রতিরোধঘটাতেঘটাতেঘটাতেঘটাতে অ্যালকোহলযুক্তফ্যাটিকরেকরেকরেকরে গিয়েছে,স্বাস্থ্যকরস্বাস্থ্যকরসহায়তাসহায়তাসহায়তা অ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টি করেকরে৪(。)。 ধারেধারেধারেকাছেকাছেকাছেকাছে লিভারেরলিভারেরস্বস্তিস্বস্তিস্বস্তি করেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরে (৫)লিভারেরহবারকমেকমে (৫)লিভারেরহবারকমেকমে (৫)
২)ভূমিকা:糖尿病
নিয়ন্ত্রণেনিয়ন্ত্রণেহলোহলোহলো (৬)গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছে রক্তেশর্করারচলেচলে যায়,মারণরোগেকরুন。গ্রহণগ্রহণকরুন。গ্রহণগ্রহণকরুন。গ্রহণ কারকিউমিনঅ্যান্টিকাজকাজ রাখেরাখে৭(৭)。 শর্করারশর্করারসুস্থসুস্থসুস্থ থাকাকারকিউমিনসহায়তাসহায়তা এরমুক্তিমুক্তিমুক্তি রাখেরাখে৮(。)。 নানানানানানানানানা করেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরে (৯)রক্তেরউচ্চনিয়ন্ত্রণে করেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরে (৯)রক্তেরউচ্চনিয়ন্ত্রণে করেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরেকরে (৯)
ভূমিকা)ভূমিকা:增强免疫力
ক্ষমতারক্ষমতারকরেকরেকরে ইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরি যেকোনরক্ষারক্ষা কেসুরক্ষিতসাহায্য যেসমস্তহতেহতেহতে পারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারেপারে পড়েপড়েপড়েপড়েপড়েশরীরদুর্বলকমেকমেকমেকমে একেরোগঘিরে গ্লাসদুধেযায়。পাওয়াপাওয়াপাওয়াপাওয়াপাওয়াপাওয়াপাওয়াপাওয়া হলুদবিভিন্নকরে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。করে。
৪)Cancer:癌症
快门
কোলন,পেটত্বকেরথাকেথাকেথাকেকোলনকোলন থাকাপ্রতিরক্ষামূলকদূরেদূরেদূরে গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছে কেমোথেরাপিকেমোথেরাপিপ্রদানপ্রদানপ্রদানপ্রদানপ্রদান (১০)সুস্থকরেকরেকারকিউমিন。 ক্যান্সারক্যান্সারক্যান্সাররাখতে প্রদাহেরপ্রদাহেরমুক্তমুক্তমুক্ত গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেগিয়েছে১১ ১১ ১১(১১)。 প্রোস্টেট,অগ্ন্যাশয়ক্ষেত্রেপালনপালন করেকরে১২(১২)。 যেযেযেযেযেযেযেযেযেযেযেযেযে (১৩)
ভূমিকা):减肥/新陈代谢
জীবনেওজনচিন্তাচিন্তা সামান্যদৈনন্দিনরাখতেরাখতেরাখতেরাখতেরাখতে রয়েছেরয়েছেরয়েছেরয়েছেহলুদ。 দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়(。)。 শরীরেবাড়তিহ্রাসহ্রাস থাকাকারকিউমিনকমাতেকমাতেকমাতে করে১৫ ১৫ ১৫(১৫)。 হলুদগ্রহণহ্রাসহ্রাসহ্রাস ক্রিয়াকলাপক্রিয়াকলাপসাহায্যসাহায্যসাহায্য সমস্তটিস্যুগুলোসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তা পারেপারেপারেপারে১৬ ১৬(১৬)১৬ থাকাকারকিউমিনসৃষ্টিসৃষ্টিসৃষ্টি কারকিউমিনওজনবৃদ্ধিতেবাধাদেয়প্রক্রিয়ারনিয়ন্ত্রণকেউন্নত এবংব্যায়ামেররাখারাখারাখারাখারাখারাখারাখারাখা (১৭)
৬)Anti:抗炎
কারকুমিননিয়ন্ত্রনউন্নতিউন্নতিউন্নতিউন্নতিউন্নতি যেযেযেযেথাকে১৮(১৮)১৮ ব্যক্তিদেরক্ষেত্রেকরেকরেকরে গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেকরে১৯ ১৯(১৯)。হাঁটুব্যথারসহায়তাসহায়তা ব্যথাব্যথাব্যথাথাকে২০(২০)。ব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথাব্যথা (২১)
৭)হলুদ:抗氧化剂
হলুদহলুদহলুদহলুদহলুদহলুদহলুদহলুদ ক্ষেত্রেঅ্যানিমিয়াকরাকরা দৈনিককাঁচাখাওয়া হলুদেরমধ্যেরক্ষারক্ষারক্ষা মধ্যেআয়রনঘাটতিঘাটতি থেকেযেকোনকরেকরেকরেকরেকরে দেয়অ্যান্টিদেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয়দেয় ক্ষতনিরাময়েসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্য
৮)ব্যবহার:心脏健康/胆固醇
করেনকরেনকরেনকরেনকরেনকাছাকাছি。২২(২২)কাছাকাছি。কাছাকাছি。২২২২ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টবৈশিষ্ট্যগুলিসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তাসহায়তা হার্টফেলএবংকরতেকরতেকরতে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরি গিয়েছেগিয়েছেগিয়েছেপারেপারেপারেপারেহলুদএগুলিকেওপ্রতিরোধকরতেপারে。 সিনড্রোমব্যাক্তিদেরসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্যসাহায্য হলুদস্ট্রোকেরকমেকমে অ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিঅ্যান্টিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিইনফ্লেমেটরিঅ্যান্টিঅ্যান্টি হলুদরক্ষারক্ষারক্ষা পরেযেকাঁচাকাঁচাকাঁচাকাঁচাকাঁচাকাঁচাকাঁচাকাঁচা খাদ্যতালিকায়হলুদচেষ্টাচেষ্টা (২৩)
৯):消化
হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা করতে পারে। কারকিউমিন এর এই অ্যান্টি ইউলার ক্রিয়া-কলাপ তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যকে উদ্ভূত করে (২৪)। কারকিউমিন এর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব গুলি খাদ্যনালীতে থাকা প্রদাহের চিকিৎসা করে। এছাড়াও কারকিউমিনে থাকা উপাদানগুলি গ্যাস্ট্রোসফেজিয়াল ডিজিজের চিকিৎসা করতে সহায়তা করে (২৫)। আলসারেটিভ কোলাইটিস এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে হলুদের ভূমিকা রয়েছে। এটি হজমের উন্নতি ঘটিয়ে প্রদাহজনিত পেটের রোগ, কোলোরেক্টাল ক্যানসার, লিভারের রোগ এবং ডায়রিয়ার সমস্যার সমাধান করতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা নিয়মিত হলুদ খায় তাদের ক্ষেত্রে হজমে সহায়ক পাচকরস এর ক্ষরণ বেড়ে যায়। যার ফলে বদহজমের সমস্যা কমে যায়। সেইসঙ্গে গ্যাস অম্বল এবং অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা কমতে থাকে। যার ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন কমাতে কাঁচা হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। (২৬)
১০) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় হলুদের ভূমিকা: Brain Health/Alzheimer’s disease
Shutterstock
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হলুদ। আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত রোগীদের হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটায়। হলুদের কারকিউমিন এ উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য গুলিকে এ ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে লক্ষ্য করা যায় (২৭)। আলঝেইমার এমন এক ধরনের রোগ যা স্নায়ু কোষ কে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। কারকিউমিন এগুলির সাথে লড়াই করে আলঝেইমার প্রতিরোধ করে। হলুদে উপস্থিত অপর একটি রাসায়নিক উপাদান হলো টিউমারন, যা মস্তিষ্কের কোষকে উদ্দীপ্ত করতে সহায়তা করে। এটি আলঝেইমার রোগ কিংবা নিউরো ডিজেনারেটিভ যে কোন অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে (২৮)। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কারকিউমিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি ইনসুলিনের গ্লুকোজ বাড়িয়ে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি কে প্রতিহত করে। এর পাশাপাশি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কোন ধরনের ডিপ্রেশনের সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে হলুদ। এটি স্ট্রেস, ডিপ্রেশন বা হতাশা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে (২৯)। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন হতাশার জন্য একটি অন্যতম নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কারকিউমিন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এর কার্যকারিতা বাড়াতে সক্ষম। তাই মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় দৈনিক এক টুকরো করে কাঁচা হলুদ কিংবা হলুদের গুঁড়ো খাওয়া প্রয়োজন। (৩০)
১১) প্রাকৃতিক বেদনা নাশক হিসেবে পরিচিত হলুদ: Natural Pain Killer
প্রাকৃতিক বেদনানাশক উপাদান হিসেবে পরিচিত হলুদ। এটির মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। বাতের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথা, বিভিন্ন ব্যথার মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির সমাধানে হলুদ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও পেটের ব্যথা কিংবা পেটের সংক্রমণ থেকেও শরীরকে সুস্থ রাখে। আর্থারাইটিস এর মতন গুরুতর সমস্যার সমাধানও হলুদের সাহায্য করা যায়। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন যৌগটি যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। হঠাৎ করে গুরুতর চোট আঘাত পেলে সে ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের ওষুধের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে হলুদ। এছাড়াও যারা দীর্ঘদিন ধরে বাতের ব্যথায় ভুগছেন তাদের মধ্যে হলুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে থাকা কারকিউমিন নানা রকম ভাবে আর্থ্রাইটিসের হাত থেকে আমাদের বাঁচায়। এ ছাড়াও কাঁচা হলুদ অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। শরীরের যেকোনো ধরনের হাড়ের ব্যথা কিংবা পেশীর ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এ ধরনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ফিজিও থেরাপির পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে যদি হলুদের ব্যবহার করা যায় সে ক্ষেত্রে সহজেই এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও দাঁতের ব্যথা এসমস্ত ক্ষেত্রেও হলুদের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এবং অন্যতম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো সাইনাস। সাইনাস এর মাথা ব্যথায় কষ্ট পেলেই এক গ্লাস হলদি দুধ নিমেষে সেই সমস্যার সমাধান করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান গুলো শরীরের যে কোন অংশের ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও যেকোন ধরনের চোট-আঘাতের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় হলুদ এর সহায়তায়।
১২) মাসিকের যন্ত্রণা কমাতে হলুদের ব্যবহার: Reduces Menstrual Pain
মাসের একটি বিশেষ সময়ে মহিলাদের শরীরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। তা মাঝেমধ্যে এতটাই কষ্টকর হয়ে যায় যে সহ্যসীমার বাইরে চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে যদি অল্প করে হলুদ খাওয়া যায় তাহলে এই সমস্যার থেকে উপকার বলে। কারণ হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান গুলি মাসিক সংক্রান্ত যে কোনও কষ্ট পেটের যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মূলতঃ হলুদকে ইস্ট্রোজেন হরমোনের উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে বর্ণনা করা হয়। মেয়েদের শরীরে থাকা অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন ইস্ট্রোজেন। মেনোপজ এর সময় পেটে ব্যথা, ডিপ্রেশন কাটাতে কাঁচা হলুদের ব্যবহার অনবদ্য। কারণ এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরী, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো যেকোনো ধরনের ব্যথার থেকে আরাম প্রদান করে এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে থাকে। শারীরিক অস্বস্তি কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। এছাড়াও হলুদ প্রাক মাসিক বিভিন্ন লক্ষণ গুলি এবং সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি প্রদান করে থাকে। কেননা এটি পিএমএস এর লক্ষণগুলির তীব্রতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যার ফলে মাসিকের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।(৩১)
১৩) বাতের ব্যথা কমাতে হলুদের ব্যবহার: Arthritis
ইতিমধ্যেই আমরা জেনে নিয়েছি যে, যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে হলুদের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বাতের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথা, যে কোন ধরনের পেশি ব্যথা গুলোর সমস্যার ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলো শরীরের ভেতর থেকে ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা করে। গবেষণায় লক্ষ্য করা গিয়েছে, হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন যেকোনো ধরনের প্রদাহ কে হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও আর্থারাইটিস কিংবা হার্টের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রেও হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হলুদের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য গুলি অস্টিওআর্থারাইটিস এর লক্ষণগুলির চিকিৎসা করতেও সহায়তা করে। এছাড়া যাদের হাঁটু ব্যথা, পেশীবহুল ব্যথা রয়েছে সেগুলি সমাধান করতে হলো সহায়তা করে। হলুদ রক্তে অক্সিজেন প্রেরণ করে। যেগুলো শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি ঘটায় এবং শরীরের যেখানে যেখানে ব্যথার সৃষ্টি হয়। সেখানে সঠিক রক্ত সঞ্চালনের ফলে রক্ত চলাচল সঠিকভাবে হয় এবং যে কোন ধরনের ব্যথা বা ফুলে যাওয়ার মতন সমস্যাগুলির সমাধান হয়। বাতের ব্যথা এক ধরনের দীর্ঘ স্থায়ী ব্যথা। হলুদের ব্যবহার করলে তার উপকারী ফল লাভ করা যায়।
১৪) প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে হলুদের ব্যবহার: Natural Antiseptic/Wounds Healing
হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্যগুলো যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া কে সহজেই ধ্বংস করে দিতে পারে। বিভিন্ন রকম পেটের অসুখ কিংবা ত্বকের রোগের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের মাধ্যমে পেটে যদি কোনরকম জীবাণুর সংক্রমণ হয়, সে ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ খালি পেটে মধু কিংবা আঁখের গুড় দিয়ে গ্রহণ করলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। কিংবা ত্বকের কোথাও কোন রকম ক্ষত দেখা দিলে কিংবা পোকামাকড়ের কারণে যদি জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে সে ক্ষেত্রে তার ওপর হলুদ এবং গোলাপ জল মিশ্রন করে যদি লাগানো যায় তার নিরাময় পাওয়া যায়। হলুদের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে যে কোন জীবাণুকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে হলুদ। তাই নিয়মিত সকাল বেলা খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়া উচিত। এটি শরীরকে যেকোনো ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। হলুদের কারকিউমিন অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে আমাদের খাদ্যনালী কে রক্ষা করে। আমরা প্রত্যেক দিন যে খাবার খাই তার মধ্যে থেকে অনেক সময় পেটের ভেতর জীবাণু যেতে পারে। তাই খাবারে কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার করবো খাদ্যনালী ক্ষতিকর জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায় এবং খাদ্যনালীর প্রদাহের সম্ভাবনা কম থাকে।
১৫) সর্দি কাশি নিরাময়ে হলুদের ভূমিকা: Cough
Shutterstock
বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো সর্দি কাশি। ছোট থেকে বড় প্রায় সব ঘরেই এই সমস্যা লেগেই রয়েছে (৩২)। কারো কারো আবার এলার্জির কারণে কিংবা শারীরিক কারণে বা জ্বরের মত সমস্যার কারণে সর্দি-কাশি দেখা যায়। তবে এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায় হলুদের সহায়তায়। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন যেকোনো ধরনের সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা কমাতে সহায়তা করে (৩৩)। এছাড়াও কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের অনাক্রম্যতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীরকে সর্দি-কাশির মতন রোগগুলো থেকে আরাম দেয়। কাঁচা হলুদে থাকা ভিটামিন সি সর্দি কাশি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রাতে শুতে যাওয়ার আগে যদি হলুদ দুধ খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে কাশি সর্দি এবং যেকোনো ধরনের শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার থেকে আরাম পাওয়া যায়। হলুদ ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি হাঁপানি, ব্রংকাইটিস এর মতন শ্বাসজনিত রোগ গুলির চিকিৎসা করতে সহায়তা করে। কারকিউমিন হাঁপানিজনিত প্রদাহ কম করতে পারে। এর পাশাপাশি চিকিৎসা প্রদান করে। হলুদের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলো সাইনাসের ক্ষেত্রেও অস্বস্তি হ্রাস করে ব্যথা থেকে নিষ্পত্তি দেয়। (৩৪)
ত্বকের জন্য হলুদের উপকারিতা – Skin Benefits of Turmeric in Bengali
সুন্দর ঝলমলে, উজ্জ্বল ত্বক সকলেরই একটা স্বপ্ন থাকে। সেক্ষেত্রে হলুদ একটি অন্যতম উপাদান যা স্কিনের যে কোন রকম সমস্যায় ব্যবহার করা যায়। এছাড়া স্কিন থেকে রোদে পোড়া দাগ, বলিরেখা, দাগ কমাতে সহায়তা করে হলুদ। যেকোনো ধরনের বাজারজাতও প্রোডাক্ট কে হার মানিয়ে দেবে হলুদের ব্যবহার। তবে দীর্ঘদিন ধরে এর ব্যবহার করলেই সে ক্ষেত্রে প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। আসুন তাহলে জেনে নিন কিভাবে হলুদ দিয়ে নিজেকে আরও সুন্দর এবং জেল্লাদার করে তুলবেন?
১) ব্রণ দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার: Acne Treatment
ব্রণ এবং ব্রণও কমে যাওয়ার ফলে দাগ সব একটি অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এই সমস্যার সমাধান মূলত যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদেরই অধিকাংশ ভুগতে লাগে। কিন্তু এই সমস্যা থেকে সমাধান হওয়ার জন্য হাতের কাছেই রয়েছে হলুদ। মূলত যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তাদের কাছে কাঁচা হলুদ একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলো ত্বকে যেকোনো ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। এছাড়াও নিয়মিত যদি হলুদ মেশানো দুধ খাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ত্বকের ভেতর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়। এর পাশাপাশি কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। যার ফলে ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল এবং প্রাণোচ্ছল দেখায় এবং বয়সের ছাপ কমতে থাকে। এর পাশাপাশি ব্রণের সমস্যা দূর হয়। হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রভাবগুলো ব্রণ সহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসা করতে পারে। যেকোনো ধরনের প্রদাহের সাথে লড়াই করে। ব্রণর সাথে সম্পর্কিত প্রদাহ কিংবা লালচে ভাব এর চিকিৎসা করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে হলুদ। (৩৫)
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- ব্রণের সমস্যা কমাতে ফেস মাস্ক হিসেবে হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।
- এক্ষেত্রে ১ টেবিল চামচ ময়দা, ১ চা-চামচ হলুদ, ৩ টেবিল চামচ দুধ এবং কয়েক ফোঁটা মধু লাগবে।
- এই উপাদানগুলো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
- এবার এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করুন।
- তারপর শুষ্ক ত্বক হলে সাধারণ জল দিয়ে এবং ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় সেক্ষেত্রে উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিন।
- তারপরে যেকোনো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
- এই মিশ্রণটি মুখে লাগানোর আগে অবশ্যই কানের পিছনে লাগিয়ে একবার টেষ্ট করে নেবেন যে কোন কিছুতে আপনার খারাপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা।
- হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন এই জাতীয় সমস্যার সাথে লড়াই করে ব্রণের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। কারণ এর মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সমূহ থাকার কারণে ব্রণ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে হলুদ।
২) সোরিয়াসিস চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার: Psoriasis
Shutterstock
হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন সোরিয়াসিস চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের যেকোনো সমস্যায় এটি একটি কার্যকরী উপাদান। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলো সোরিয়াসিস, একজিমা জাতীয় ত্বকের রোগ গুলো নিরাময়ে সহায়তা করে (৩৬)। অ্যান্টিবায়োটিক এর সাথে মিলিত হয়ে কারকিউমিন সোরিয়াসিস জাতীয় ত্বকের রোগের সমস্যার সমাধান করে। হলুদের উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো যেকোনো ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালনকে ত্বরান্বিত করে (৩৭)। যেকোনো ধরনের প্রদাহ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে হলুদ। এটি অন্যতম একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা শরীর এবং ত্বকের সমস্যা গুলোর সমাধান করতে পারে। ওষুধের ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেলেও সোরিয়াসিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে কোন রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় না। বরং প্রাকৃতিক উপায়ে হলুদ এসমস্ত ত্বকের রোগের সমস্যার সমাধান করে। (৩৮)
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- সোরিয়াসিস কিংবা একজিমার মত চর্মরোগের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। মূলত প্রাচীন যুগ থেকেই আমরা শুনে আসছি হলুদ রক্ত শুদ্ধ করে।
- তাই যে কোন ধরনের চর্মরোগ দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
- হলুদের ফুলের পেস্ট তৈরি করে সোরিয়াসিস, একজিমা আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রাখুন।
- ৩০ মিনিট পরে সেটা ধুয়ে ফেলুন।
- এভাবে পরপর কয়েকদিন করলে এই সমস্যাগুলির সমাধান হবে।
- এছাড়াও কাঁচা হলুদ বেটে নিয়ে এই চর্মরোগ আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগিয়ে রাখুন। তাহলে খুব দ্রুতই এই সমস্যাগুলি থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।
৩) বলিরেখা দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার: Wrinkles
ত্বক তিরিশের কোঠায় পেরোলো কি ত্বকের বলিরেখা জানান দিতে থাকে যে বয়স বাড়ছে আর সেটাই একজন মহিলার ক্ষেত্রে হতাশা হওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই ত্বক পরিচর্যায় আজ থেকেই হলুদের ব্যবহার শুরু করুন। কেননা হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গুলো বার্ধক্য প্রতিরোধে অর্থাৎ বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে। কারন হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন এ অ্যান্টি মুটেজেনিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলোকে কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও হলুদ যেকোনো ধরনের দাগ, হাইপারপিগমেন্টেশন, বলিরেখার সমস্যার চিকিৎসা করতে পারে। এগুলির ক্ষতিকর প্রভাব দূরীকরণে সহায়তা করে। (৩৯)
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- ত্বকের বলিরেখা কিংবা বার্ধক্যজনিত দাগ কমাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হলুদের প্যাক হল কাঁচা হলুদ এবং দুধের সর।
- কাঁচা হলুদের সঙ্গে দুধের সর মিশিয়ে নিন।
- এবার একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
- এটি মুখে লাগিয়ে তিরিশ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
- দৈনিক একটি ব্যবহার করুন তবে ত্বক থেকে বলিরেখা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও যেকোনো ধরনের সমস্যা থাকলে সেটিও কমে যাবে। হলুদ ত্বকের ভেতর থেকে ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
৪) রোদে পোড়া দাগ কমাতে হলুদের ব্যবহার: Sunburns
সারা সপ্তাহ অফিস কিংবা কলেজে দৌড়াতে দৌড়াতে আমাদের মতন গ্রীষ্মপ্রধান দেশে সানবার্ন কিংবা রোদেপোড়ার সমস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। অতিরিক্ত সময় সূর্যালোকের সংস্পর্শে থাকলে ত্বকের ওপরে এক ধরনের কালচে আস্তরণ পড়ে যায়, যেটাকে বলা হয় সানট্যান। মূলত যাদের শরীরে মেলানিনের অধিক আধিক্য লক্ষ্য করা যায় তাদের সূর্যালোকের উপস্থিতিতে অধিক মেলানিন সৃষ্টি হয়। যার ফলে ত্বকে এক ধরনের কালচে ভাব লক্ষ্য করা যায়। তাই সানবার্ন কিংবা সানট্যান কমাতে অন্যতম একটি মোক্ষম উপাদান হলো হলুদ। এটি ত্বকের উপরের স্তরে পড়া যেকোনো দাগ থেকে ত্বককে মুক্তি দেয় এবং ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- সূর্যের তাপে হওয়া সানট্যান দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো হলুদ।
- এক চামচ টক দইয়ের সাথে আধা চামচ হলুদ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
- এবার এই মিশ্রণটি ত্বকের উন্মুক্ত অংশে লাগিয়ে কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করুন।
- কুড়ি মিনিট বাদে জল দিয়ে হালকা হাতে এই মিশ্রণটি তুলে ফেলুন।
- সপ্তাহে তিন দিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ট্যানের সমস্যা দূর হবে এবং নতুন করে পড়বে না।
- প্রয়োজন হলে এই মিশ্রণে লেবুর রস মেশাতে পারেন, সেক্ষেত্রে এটি আরও কার্যকরী হবে।
- তবে হলুদের ব্যবহার করার আগে অবশ্যই একবার প্যাচ টেস্ট করে নেবেন। কেননা অনেকের লেবু থেকে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে অসুবিধা হলে লেবু ব্যবহার করবেন না।
৫) স্ট্রেচ মার্ক কমাতে হলুদের ব্যবহার: Stretch Marks
প্রেগনেন্সির পর কিংবা হঠাৎ মোটা থেকে রোগা হয়ে যাবার পর ত্বকে এক ধরনের স্ট্রেচ মার্কস লক্ষ্য করা যায় যেগুলো দেখতে খুব বাজে লাগে। সেগুলির নিরাময়ে একটি অন্যতম উপাদান হলো হলুদ। কেননা হলুদের মধ্যে উপস্থিত কারকিউমিন যেকোনো ধরনের ক্ষত কিংবা দাগ ছোপ নিরাময়ে সহায়তা করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাস উপাদান গুলো ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি দাগহীন রাখতে সহায়তা করে, তাই এক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- নারকেল তেলের সাথে হলুদ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
- এবার এই মিশ্রণটি স্ট্রেচ মার্ক যুক্ত অংশে প্রতিদিন স্নানের আগে লাগিয়ে কুড়ি মিনিট রেখে দিন।
- তারপর ধুয়ে ফেলুন।
- এই ভাবে দৈনিক ব্যবহারের ফলে সাত দিনেই তফাৎ দেখতে পারবেন।
- স্ট্রেচমার্ক আস্তে আস্তে হালকা হতে শুরু করবে। হলুদ যেকোনো ধরনের প্রদাহ কিংবা ক্ষত ও দাগ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এক্ষেত্রেও হলুদের ব্যবহার সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
৬) পিগমেন্টেশন কমাতে হলুদের ব্যবহার: Pigmentation
বয়স বাড়ার সাথে সাথে কিংবা অত্যধিক খোলা জায়গায় চলাফেরা করার জন্য অনেকেরই ত্বকে অকালেই পিগমেন্টেশনের মতন সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে হোয়াইট ও ব্ল্যাকহেড এর সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। হলুদের মধ্যে থাকা উপাদানগুলো এ ধরনের সমস্যাগুলো সমাধানে সহায়তা করে থাকে। ত্বকের যেকোন সমস্যার ক্ষেত্রে হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও ইউভি এ এবং ইউভিবি রশ্মির কারণে ত্বকের যে সমস্ত ক্ষতি হয় সেগুলি দূরীকরণেও হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখার পাশাপাশি রূপচর্চায় হলুদের ব্যবহার রাখতে হবে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেশন কিংবা বলিরেখা, দাগছোপ দূরীকরণে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো হলুদ।
- এক্ষেত্রে টকদই এর সাথে হলুদ মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন।
- এবার এই মিশ্রণটি পিগমেন্টেশন অংশে লাগিয়ে কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করুন।
- এবং তারপর মুখ ধুয়ে নিন।
- এটি ত্বককে উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বকের যেকোনো সমস্যার সমাধান করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করবে।
৭) ফাটা গোড়ালির চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার: Cracked feet
Shutterstock
হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন কিংবা খুব গরম কিংবা খুব ঠান্ডার সময় আমাদের অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো ফাটা গোড়ালি। এটি সকলের ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। পুরুষ-মহিলা সকলেই ফাটা গোড়ালির শিকার হতে পারে। মূলত পায়ের পাতা শরীরের ভার বহন করতে করতে যখন ত্বকের আর্দ্রতা হারায় তখনই পা ফাটার মতন সমস্যাগুলো লক্ষ করা যায়। দীর্ঘক্ষণ খালি পায়ে হাঁটা কিংবা দীর্ঘক্ষন জুতো পড়ে থাকার কারণে পায়ের ত্বক আর্দ্রতা হারায়, যেকারণে গোড়ালি ফাটার মতন সমস্যাগুলো দেখা যায়। এক্ষেত্রে হলুদ অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর মধ্যে থাকা কারকিউমিনে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গুলি রয়েছে যেটা যেকোনো ধরনের প্রদাহ কিংবা ক্ষত নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- ফাটা গোড়ালি নিরাময়ের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো হলুদ।
- হলুদ এবং মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
- এবার পায়ের গোড়ালি পরিষ্কার করে নিয়ে এই মিশ্রণটি রাতে শুতে যাওয়ার আগে কুড়ি মিনিট ধরে লাগিয়ে রাখুন।
- এছাড়াও রোজ স্নানের আগে পিউমিক স্টোন দিয়ে অবশ্যই পায়ের গোড়ালি ঘষে নিন।
- এতে পায়ের গোড়ালি থেকে মৃত কোষ দূর হয়ে যাবে এবং পায়ের ত্বক তার উপযুক্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবে এবং পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যার সমাধান হবে
- দৈনিক যদি এটি ব্যবহার করতে পারেন এবং স্নান করার আগে তা পিউমিক স্টোন দিয়ে ঘষে নিতে পারেন সে ক্ষেত্রে কয়েক দিনের মধ্যে পা ফাটার সমস্যার সমাধান হবে।
৮) এক্সফোলিয়েশন এ হলুদের ব্যবহার: Aids Exfoliation
আমরা সকলেই জানি ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখতে গেলে সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন ত্বকে এক্সফোলিয়েশন প্রয়োজন। যাতে ত্বক প্রত্যেক সময় যে মৃতকোষগুলো ছাড়ছে সেগুলো এক্সফোলিয়েশন এর ফলে দূর হবে। কেননা এই মৃতকোষগুলো ত্বকের উপর থেকে গেলে ত্বক প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। যার ফলে ত্বক অনুজ্জ্বল এবং কালচে দেখায়। তাই সপ্তাহে অন্তত দুইবার কিংবা তিনবার ত্বকের এক্সফোলিয়েশন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আর এটি অন্যতম উপাদান হলো হলুদ। বাজার চলতি বহু প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন এ উপস্থিত উপাদানগুলো ত্বকের মৃত কোষগুলি সরিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে সহায়তা করে। তবে বাজার চলতি প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের এক্সফোলিয়েশনের এজন্য স্ক্রাবার তৈরি করে নিতে পারেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- ত্বকের এক্সফোলিয়েশন এর ক্ষেত্রে অন্যতম একটি স্ক্রাবার হলো হলুদ।
- এক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ এবং শুকনো কমলা লেবুর খোসা একসঙ্গে বেটে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
- এবার এটি স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করুন।
- এই প্রাকৃতিক স্ক্রাবার টি ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে ত্বক জেল্লাদার করে তুলতে সহায়তা করবে।
- এটি সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন ব্যাবহার করুন। দেখবেন মাত্র ১৫ দিনে ত্বক তার হারানো জেল্লা খুঁজে পাবে।
চুলের জন্য হলুদের উপকারিতা – Hair Benefits of Turmeric in Bengali
স্ট্রেস, ধুলো, পলিউশন এর এই যুগে চুলপড়া একটি জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যার শিকার বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই। তবে এর সমাধান রয়েছে কিছু। যদিও আমরা না জানার কারণে সেই সব সমাধান করতে পারিনা। তবে এবার জেনে নিন হলুদের সাহায্যে কিভাবে চুল পড়া কিংবা চুলের যেকোন সমস্যার সমাধান করবেন?
১) চুল পড়া কমাতে হলুদের ব্যবহার: Prevents Hair Loss
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে লক্ষ্য করা গিয়েছে চুল পড়া কমাতে হলুদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে হলুদ সরাসরি চুলে প্রভাব না ফেললেও হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন মাথার ত্বকে হওয়া যে কোন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান গুলো মাথার ত্বক পরিষ্কার করে চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। যার ফলে মাথার ত্বক পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে এবং কোনরকম জীবাণুর সংক্রমণ থেকে তা রক্ষা পায়। মাথার ত্বকে অনেক সময় চুলকুনির মতন সমস্যাগুলো দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- চুল পড়া কমাতে হলুদের ব্যবহার প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ্য করা না গেলেও এটির প্রভাব চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় লক্ষ্য করা যায়।
- এ ক্ষেত্রে নিম পাতার রস, অ্যালোভেরা জেল এবং কাঁচা হলুদ একসাথে মিক্সিতে পিষে নিয়ে তার থেকে রসটা চেপে নিন।
- এবার তা মাথার গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে রাখুন।
- সম্ভব হলে সারারাত লাগিয়ে রেখে পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।
- এই মিশ্রণটি মাথার ত্বককে যে কোন ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে এবং চুলে জীবাণু সংক্রমণ কে দূর করবে এবং চুল পড়া কমাতে সহায়তা করবে।
২) খুশকি দূরীকরণে হলুদের ভূমিকা: Dandruff
Shutterstock
চুল পড়ার অন্যতম মূল কারণ হলো মাথায় খুশকির সমস্যা। খুশকি মূলত দু’ধরনের দেখা যায়, একটা শুষ্ক, আরেকটা হল তৈলাক্ত। তৈলাক্ত খুশকি যেটা মাথার ত্বকে বসে থাকে আর শুষ্ক যেটা সারা চুলে এবং জামাকাপড়ে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এই খুশকি নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হলুদ। মূলত খুশকি একটা রোগ হয়ে দাঁড়ায়। খুব বেশি বাড়াবাড়ি হলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু উপাদান অবলম্বন করেই খুশকির সমস্যা দূরীকরণ করা যায়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
- খুশকি দূরীকরণে হলুদের ব্যবহার পরোক্ষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
- নিম পাতার রসের সাথে হলুদ মিশিয়ে কিংবা পেঁয়াজের রসের সাথে হলুদ মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান।
- এরপর মিশ্রণটি লাগিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন এবং শ্যাম্পু করে ফেলুন।
- সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এটি ব্যবহার করুন। দেখবেন সমস্যার সমাধান হয়েছে।
- এছাড়াও রাস্তায় বেরোনোর আগে মাথায় অবশ্যই স্কার্ফ লাগিয়ে বের হন কিংবা সরাসরি রোদ্দুরে না থাকার চেষ্টা করুন।
- মাথার ত্বককে শুষ্ক রাখার চেষ্টা করুন। তাহলেই চুলের সমস্যার থেকে সমাধান সম্ভব হবে।
হলুদের পুষ্টিগত মান – Turmeric Nutritional Value in Bengali
ক্যালোরি তথ্য | ||
---|---|---|
এক টুকরো | % | |
ক্যালোরি | ২৩.৯ (১০০) কে যে | ১% |
কার্বোহাইড্রেট | ১৬.৩ (৭০.৩) কে যে | |
ফ্যাট | ৫.৬ (২৩.৪) কে যে | |
প্রোটিন | ১.৫ (৬.৩)কে যে | |
এলকোহল | ০.০ (০.০) | |
ভিটামিন | ||
এক টুকরো | % | |
ভিটামিন এ | 0.0 IU | 0% |
ভিটামিন সি | ১.৭ মিলিগ্রাম | ৩% |
ভিটামিন ডি | ~ | ~ |
ভিটামিন ই | ০.২ মিলিগ্রাম | ১% |
ভিটামিন কে | ০.৯ মিলিগ্রাম | ১% |
থায়ামিন | 0.0 মিলিগ্রাম | ১% |
রিবোফ্লাভিন | 0.0 মিলিগ্রাম | ১% |
নিয়াসিন | ০.৩ মিলিগ্রাম | ২% |
ভিটামিন বি ৬ | ০.১ মিলিগ্রাম | ৬% |
ফোলেট | ২.৬ মিলিগ্রাম | ১% |
ভিটামিন বি ১২ | 0.0 মিলিগ্রাম | 0% |
প্যান্টোথেনিক এসিড | ~ | ~ |
কোলিন | ৩.৩ মিলিগ্রাম | |
বেটাইন | ০.৭ মিলিগ্রাম | |
মিনারেল | ||
এক টুকরো | % | |
ক্যালসিয়াম | ১২.৪ মিলিগ্রাম | ১% |
আয়রন | ২.৮ মিলিগ্রাম | ১৬% |
ম্যাগনেসিয়াম | ১৩.০ মিলিগ্রাম | ৩% |
ফসফরাস | ১৮.১ মিলিগ্রাম | ২% |
পটাসিয়াম | ১৭০ মিলিগ্রাম | ৫% |
সোডিয়াম | ২.৬ মিলিগ্রাম | 0% |
জিঙ্ক | ০.৩ মিলিগ্রাম | ২% |
কোপার | 0.0 mg | ২% |
ম্যাঙ্গানিজ | ০.৫ মিলিগ্রাম | ২৬% |
সেলেনিয়াম | ০.৩ মিলিগ্রাম | 0% |
ফ্লুরাইড | ~ |
হলুদের ব্যবহার – How to Use Turmeric in Bengali
ইতিমধ্যেই হলুদের নানা উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনে নিয়েছি। এবার জেনে নিন কিভাবে খাদ্যতালিকায় এর ব্যবহার করবেন।
১) খাদ্য তালিকায় থাকা বিভিন্ন ভাজা শাক সবজি গুলোতে রান্নার সময় এক চিমটে হলুদ দিন। এতে একটি সুস্বাদু খাবার যেমন তৈরি হবে, তেমনি এটি পুষ্টিকর হবে। আলুভাজা কিংবা ফুলকপি দিয়ে কোন খাবার তৈরি করার সময় এতে অল্প পরিমাণে হলুদ দিয়ে দিন। এটি দেখতেও সুন্দর হবে এবং খাবার দিক দিয়েও পুষ্টিগত হবে।
২) আপনার খাদ্য তালিকায় থাকা সবুজ সালাড গ্রহণ করার সময় তার ওপরে কিছুটা হলুদের গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। এতে স্যালাডের গুণগতমান আরো বেড়ে যাবে এবং আরো পুষ্টিকর হয়ে উঠবে।
৩) রোজ রাতে ডিনারে স্যুপ খাচ্ছেন ওজন কমানোর জন্য? তাহলে তো খুবই ভালো। সুপের মধ্যেই নিয়ে নিন এক চিমটে হলুদ। এটা স্যুপকে আরো বেশি স্বাস্থ্যকর করে তুলবে।
৪) সকালে কিংবা সন্ধ্যেতে হলুদ দিয়ে যে কোন ধরনের জুস তৈরি করে খেতে পারেন। এটি ত্বককে এবং ভেতর থেকে শরীরকে সুস্থ রাখবে।
৫) এছাড়াও হলুদ চা তৈরি করে খেতে পারেন।
৬) নারকেলের দুধের সাথে হলুদ ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে তার মধ্যে অল্প মধু দিয়ে একটি সুস্বাদু পানীয় তৈরি করে খেতে পারেন।
৭) এছাড়া যদি আপনি কাঁচা হলুদ খেতে পারেন তা তো খুবই ভালো স্বাস্থ্যের জন্য। তবে যদি কাঁচা হলুদ সরাসরি খেতে না পারেন সেখানে যে কোন খাবার প্রস্তুতির সময় তার মধ্যে এক চিমটে হলুদ দিয়ে দিন। এটি আপনার শরীরে সমানভাবে কার্যকরী হবে।
৮) এছাড়াও আমাদের চারপাশে বিভিন্ন প্রসাধনী, টুথপেস্ট, সাবান রয়েছে যেগুলো হলুদ দিয়ে তৈরি হয়। ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করতেই পারেন।
৯) তবে অবশ্যই সেগুলোর কার্যকরীতা দেখে। কেননা কোনও একটি প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার কার্যকারিতা যতটা না হবে এর থেকে ঘরোয়া উপায়ে হলুদ যদি ব্যবহার করা যায় সেটা আরও ভাল প্রভাব ফেলবে। (৪০)
হলুদের অপকারিতা – Side Effects of Turmeric in Bengali
আমরা একথা সকলেই জানি কোনও জিনিসই অতিরিক্ত ব্যবহার করা ঠিক নয়। সে ক্ষেত্রে হলুদ এর বিকল্প নয়। একনাগাড়ে যদি অত্যধিক পরিমাণে হলুদ ব্যবহার করা হতে থাকে সে ক্ষেত্রে কিন্তু কিছু কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। জেনে নিন অত্যধিক হলুদ ব্যবহারের ফলে আপনার শরীরে কি কি সমস্যা হতে পারে?
১) গর্ভাবস্থায় কিংবা প্রসূতিকালীন অবস্থায় সমস্যা:
গর্ভাবস্থায় কিংবা স্তন্যদানের সময় অত্যধিক হলুদ খাওয়ার ফলে যে কোনো গুরুতর সমস্যা হতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া না গেলেও এই সময় খাবারে স্বল্প পরিমাণে হলুদ খাওয়াই নিরাপদ। কেন না এর অত্যধিক গ্রহণের ফলে গর্ভস্থ সন্তানের সমস্যা হতেই পারে। তাই হলুদের পরিমাণ বাড়ানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং খাবারে কি পরিমাণ হলুদ গ্রহণ করবেন সেটি অবশ্যই তার থেকে পরামর্শ করে জেনে নিন।
২) কিডনির পাথর বাড়িয়ে তুলতে পারে:
অত্যধিক হলুদের ব্যবহার কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। হলুদে ২% অক্সলেট থাকে। যা অত্যধিক মাত্রায় গ্রহণের ফলে কিডনিতে পাথরের মতন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি কিডনি বিকল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই অত্যধিক হলুদ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী হলুদ গ্রহণ করুন। (২০)
৩) শরীরে লোহার অভাব:
অত্যধিক হলুদ ব্যবহার করার ফলে শরীরে লৌহের ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে। কেননা হলুদ আয়রন শোষণ রোধ করতে পারে, যার ফলে আয়রনের ঘাটতি দেখা যেতে পারে। তবে যে সমস্ত ব্যক্তিদের শরীরে লৌহের ঘাটতি রয়েছে তারা অবশ্যই উচ্চ মাত্রায় হলুদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। এক্ষেত্রে উপকারের বদলে অপকার হতে পারে। (৪১)
৪) রক্তপাতের সমস্যা:
হলুদ রক্তকে তরল করে দিতে সহায়তা করে। এটি একাধারে যেমন ভাল, অন্যদিকে অত্যন্ত খারাপ। কেননা হঠাৎ যদি কোন রক্ত ক্ষরণ কিংবা সার্জারি হয় সে ক্ষেত্রে হলুদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। কারণ হলুদ রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। যার ফলে কোন যদি রক্তক্ষরণজনিত ব্যাধি হয় সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও কোনরকম অপারেশন হলে সে ক্ষেত্রে তার দু তিন সপ্তাহের মধ্যে হলুদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
৫) অ্যালার্জির সম্ভাবনা:
অতিরিক্ত হলুদ খেলে এলার্জি সমস্যা দেখা যেতে পারে। হয়তো তরকারিতে হলুদ খেলে সেটা বোঝা যাবে না কিন্তু যদি কাঁচা হলুদ খাওয়া শুরু করেন সেক্ষেত্রে অনেকের ক্ষেত্রে ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয় অর্থাৎ শরীর তা নিতে পারেনা। তাই হলুদ খাওয়া শুরু করার পর যদি এরূপ কোন সমস্যা হয় তাহলে সাথে সাথেই হলুদ খাওয়া বন্ধ করুন।
৬) পেট খারাপ বা ডায়রিয়া:
আমরা অনেকেই দেখি হঠাৎ করে কোন জিনিসের গুনাগুন দেখে তা চট করে শুরু করে দিই। তেমনই শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেককেই হলুদ গুঁড়ো কিংবা কাঁচা হলুদ খেতে দেখা যায়। তবে তা অত্যধিক পরিমাণে খেয়ে ফেললে কিন্তু শরীরের জন্য খারাপ। সে ক্ষেত্রে পেট খারাপ, ডায়রিয়া কিংবা বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সমস্ত কোন সমস্যা থেকে থাকলে হলুদ খুব বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা চলবে না। পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই আমরা এই নিবন্ধটি থেকে হলুদের বিভিন্ন গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিয়েছি। এর পাশাপাশি অত্যধিক হলুদ গ্রহণের ফলে কিরূপ সমস্যা হতে পারে তার সম্পর্কেও জেনেছি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এর পাশাপাশি ত্বক পরিচর্যায়ও হলুদের ব্যবহার অনস্বীকার্য। সুতরাং আজ থেকেই রান্নাঘরের এই পরিচিত মসলা টিকে আপনার খাদ্যতালিকায় এবং রুপচর্চায় শামিল করুন। যাতে আপনি আরো স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর থাকতে পারেন। এর পাশাপাশি আরো নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের পেজে চোখ রাখুন এবং অবশ্যই আপনি দৈনিক খাদ্যতালিকায় কত পরিমাণ হলুদ খাদ্য তালিকাশ রাখছেন সেটা আমাদের জানাতে ভুলবেন না।